ধর্মপাশায় এক যুগ ধরে তালাবদ্ধ গণপাঠাগার  

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সড়কের উত্তর পাশে অবস্থিত গণপাঠাগারকে বাইরে থেকে দেখতে বেশ চকচকে মনে হলেও ভেতরে পুরোটাই ফাঁকা। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ পাঠাগার থেকে ২০০৮ সালে বইপত্র চুরি হওয়ার পর এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পাঠাগারের সামনের অংশ মলমূত্র ত্যাগের অন্যতম জায়গায় পরিণত হয়েছিল। ২০১৩ সালে ধর্মপাশা থানার তৎকালীন ওসি ‘এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ’ লেখা সমৃদ্ধ একটি সাইনবোর্ডও ঝুলিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

একই বছর পাঠাগার চালুর দাবিতে স্থানীয় সচেতন ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। সে সময় প্রশাসন তা নামমাত্র চালু করলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও পাঠাগারটির দরজায় তালা ঝুলে। তবুও প্রতিবছর এ প্রতিষ্ঠানটি সরকারি বরাদ্দে সংস্কার করা হয়। রং করে চকচকে করা হয়। মেরামত করা হয় দরজা জানালা। বদলানো হয় চালার টিন। তাই বাইরে থেকে দেখতে একটি পরিপাটি গণপাঠাগার বলেই মনে হয়। কিন্তু বাস্তব চিত্র পুরো উল্টো। এখানে নেই কোনো বই ও আসবাবপত্র।

এ প্রতিষ্ঠানটি চালুর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতাকে দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং আলোকিত মানুষ তৈরির সহায়ক হিসেবে উপজেলা গণপাঠাগারটি চালুর দাবি জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী তরিকুল ইসলাম পলাশ ও লংকাপাথারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়তী রাণী তালুকদার বলেন, পরিচর্যা ও কমিটি না থাকায় এটি জরাজীর্ণ হয়ে যায় এবং তার সমস্ত কিছুই বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। তাই কমিটি গঠনের মাধ্যমে এটিকে রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানান তারা।

স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী সাজিদুল হক সাজু ও চয়ন কান্তি দাস বলেন, ‘যুব সমাজ ক্রমেই বিপদগামী হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য অচিরেই উপজেলা গণপাঠাগারটি চালু করা উচিত।’

স্থানীয় কবি আনিসুল হক লিখন বলেন, ‘জ্ঞান অন্বেষণের জন্য পাঠাগারটি চালু করা জরুরি।’

এদিকে পাঠাগারটি সরগরম করতে ফের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, ‘এটি সংস্কারের জন্য এডিপি থেকে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। বই কেনার জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে। বই আসার পরে একটি নীতিমালা তৈরি করে পাঠাগারটি চালু করা হবে।’

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন বলেন, ‘পাঠাগারটি ইতোমধ্যে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংস্কার করার পরপরই এটি চালুর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

টাইমস/এসই/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ